ঢাকা, রবিবার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

২১ শে অন্য লাইন 

শামীম আজাদ

প্রকাশিত : ১৫:৫৮, ১২ এপ্রিল ২০২৪

বোধদয়

পদে পদে উষ্ঠা খেতে খেতে
প্রতিবাদ না করে করে
জিহ্বার ওজন এমন বেড়েছে যে
এখন সেখানে আর কোন কথাই সরে না। ।

বেড়ে গেছে আমার নিজেরও ওজন
ভিনদেশী লেবাসে মাথা বেঁধে মহানন্দে
বিশ্বব্যপী করিতেছি ভ্রমন!

এদিকে নিজ-ধর্ম ধর্ষণ করে,
দেশোগেহ নাপাক করে,
একটির পর একটি
কবিরাহ্ গুনাহ যাচ্ছে যারা
তাদের নিয়ে আমি কিছুই বলছি না!
আমি কুলকুচি করে দাঁত থেকে
সংখ্যালঘুর মাংসগন্ধ ধু’য়ে নির্বিকার
করিয়া চলেছি কেবল
আমারই উপাসনা।

সে সুযোগে গা থেকে খুলে যাচ্ছে
একাত্তরে পাওয়া মানবতা, সংস্কৃতি 
ও সম্প্রীতির রক্ষাকবচ। 
মাথা বেয়ে লকলক উঠে যাচ্ছে
অর্বাচীনদের যত হচপচ।

আজ হঠাৎ নিজদেহের চর্বি
পুড়ে যাবার গন্ধে জেগে উঠে দেখি 
হায় হায় আমিও যে ক্রমশ
বেআব্রু হয়ে যাচ্ছি একি!


তবে আর কেনো আমি
কারো সখের সওয়ারী হয়ে রবো?
আমি না পিরানী কবি
আমার না আছে জ্যোতির্ময়
ঐতিহ্যের লাঙ্গল,
কিংবদন্তী পূর্ব পুরুষের বর
জন্মলগ্নে এই শামীমের রুহতেই না
মা আমার বুনে দিয়ে ছিলো মাতামহীর
শীলচর কৃষানীর চর!

সত্যি যদি হই বাংলাদেশের কবি
এখন আমার একমাত্র কাজ হবে
মর্মাত্মা দিয়া আঁকবার 
সম্প্রীতি-সংহারক পাপিষ্ঠদিগের ছবি।।

পাখি তুমি 

মসৃণ উড়ালেরে পাখি,
তুমি যেখা খুশি যাও 
যে ডাল পছন্দ সেখানেই বসো
নিজপছন্দে খড়কুটো বেছে সেথা 
নিজঘর সাজাও।  

কখনোবা যেমন অমনি এসেছিলে 
ইচ্ছেমত অমনি উড়ে চতুর্থ আসমানে গিয়ে 
সূর্যের সাথে কথা সেরে নাও
যারে ভালোবাসো তারে লয়ে থাকো
অথবা কোথাও না কোথাও হারাও।  


পাখি তোমার তো লাগে না পাশপোর্ট
লাগে না ভ্রমণ ভিসা অথবা রিসোর্ট 
তোমার ভাবিতে হয় না শত প্রশ্নের উত্তর
যখন তখনই তোমার উড়াল 
অনন্ত অবসর।
  

বল পাখি, একটি বার কি উড়ে যাবে তুমি 
আমার অনুরোধে সেখানে 
ঐ সাত সাগর আর তেরো নদীর ওপারে
ইংল্যান্ড থেকে বহুদূরে
যেখানে আমার শৈশব-চিহ্ন পড়ে আছে   
বাংলাদেশের শীর্ণ ব্রম্মপুত্র তীরে?  


তোমার স্বাধীনতা তো প্রবাদের মত সত্য 
তাই তুমিই জানতে পারবে  
কেমন আছে আমার ছোটবেলার বন্ধুরা,   
আর যা যা কিছু ফেলে এসেছি তার সব 
সব স্মৃতিরা।    
  

হয়তো কর্দমাক্ত পথে এখনো 
আমার ছেঁড়া স্যান্ডেলের একপাটি 
অদ্ভুত, শক্ত হয়ে গেঁথে আছে
হয়তো সে পথেই আমার হারিয়ে যাওয়া  
ছোট্ট দিদিটির চুলের লাল ফিতে
রোদ বৃষ্টি ঝড়ে  
এতদিনে খয়েরী হয়ে গেছে!

ওরে ও ম্যাগপাই, ইচ্ছে হলে 
সঙ্গে তোমার মিসেসকেও নিও
পটহে গল্পটল্প করিও 
তুমি তো মানুষ নও শুধু মাত্র সে কারণেই
কোথাও তোমার হারিয়ে যাবার নেই মানা 
সেই কথা বুঝিও।

বিচ্ছিন্নতা 

ভালোবেসে ছিন্ন করি
অন্ধ অশ্রুজল
অশ্রুবৃষ্টি সৃষ্টি করে
পরম পাথর।।

অবিচ্ছিন্নতা  
আঘাতে জেগে উঠে দেখি তুমি ত্বক হয়ে গেছো
গা থেকে কিছুতেই তোমায় খুলতে পারছি না!

মিলন 
যখন স্যূপের বাটিতে এক সুশ্রী সন্ধ্যা নেমে এলো 
ফায়ার প্লেসটি টুব করে চুপ হয়ে গেলো 
এখন ঠোঁট ও বাটি আরতো পারছে না  
ওরা কোন অপেক্ষাই মানছে না।  

কেআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি